রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা আজকে আপনাদের শেয়ার করবো। আপনি যদি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা জানতে চান তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য।  আপনাদের জন্য নিয়ে হাজির হয়েছি বাছাইকিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা। আপনি যদি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা সোশাল মডিয়ায় সার্চ করে থাকেন কিন্তু পছন্দের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা না পেয়ে থাকেন তবে চিন্তার কিছু নেই আমরা সুন্দর সুন্দর বাছাই করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা  শেয়ার করেছি আশা করি আপনারও পছন্দ হবে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা অসংখ্য রয়েছে।  তবে আমরা সেরা কতগুলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা শেয়ার করেছি। যেগুলো অনেক সুন্দর আপনারও পছন্দ হবে। আপনার পছন্দের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা  এখান থেকে খুজে নিন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা 

এখন আপনাদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা শেয়ার করবো।  আশা করি আপনাদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা গুলো পছন্দ হবে। তাহলে চলুন দেখা আশি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা।  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা নিচে দেওয়া হলো :


অনন্ত প্রেম

কাব্যগ্রন্থ-মানসী

জোড়াসাঁকো ২ ভাদ্র  ১৮৮৯

তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি
শত রূপে শত বার
জনমে জনমে, যুগে যুগে অনিবার।
চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয়
গাঁথিয়াছে গীতহার,
কত রূপ ধরে পরেছ গলায়,
নিয়েছ সে উপহার
জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার।
যত শুনি সেই অতীত কাহিনী,
প্রাচীন প্রেমের ব্যথা,
অতি পুরাতন বিরহমিলনকথা,
অসীম অতীতে চাহিতে চাহিতে
দেখা দেয় অবশেষে
কালের তিমিররজনী ভেদিয়া
তোমারি মুরতি এসে,
চিরস্মৃতিময়ী ধ্রুবতারকার বেশে।
আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি
যুগল প্রেমের স্রোতে
অনাদিকালের হৃদয়-উৎস হতে।
আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা
কোটি প্রেমিকের মাঝে
বিরহবিধুর নয়নসলিলে,
মিলনমধুর লাজে–
পুরাতন প্রেম নিত্যনূতন সাজে।
আজি সেই চিরদিবসের প্রেম
অবসান লভিয়াছে
রাশি রাশি হয়ে তোমার পায়ের কাছে।
নিখিলের সুখ, নিখিলের দুখ,
নিখিল প্রাণের প্রীতি,
একটি প্রেমের মাঝারে মিশেছে
সকল প্রেমের স্মৃতি–
সকল কালের সকল কবির গীতি

স্মৃতি

কাব্যগ্রন্থ- কড়ি ও কোমল

ওই দেহ-পানে চেয়ে পড়ে মোর মনে
যেন কত শত পূর্বজনমের স্মৃতি।
সহস্র হারানো সুখ আছে ও নয়নে,
জন্ম-জন্মান্তের যেন বসন্তের গীতি।
যেন গো আমারি তুমি আত্মবিস্মরণ,
অনন্ত কালের মোর সুখ দুঃখ শোক,
কত নব জগতের কুসুমকানন,
কত নব আকাশের চাঁদের আলোক।
কত দিবসের তুমি বিরহের ব্যথা,
কত রজনীর তুমি প্রণয়ের লাজ,
সেই হাসি সেই অশ্রু সেই সব কথা
মধুর মুরতি ধরি দেখা দিল আজ।
তোমার মুখেতে চেয়ে তাই নিশিদিন
জীবন সুদূরে যেন হতেছে বিলীন।


প্রথম চুম্বন

কাব্যগ্রন্থ-মানসী

স্তব্ধ হল দশ দিক নত করি আঁখি–
বন্ধ করি দিল গান যত ছিল পাখি।
শান্ত হয়ে গেল বায়ু, জলকলস্বর
মুহূর্তে থামিয়া গেল, বনের মর্মর
বনের মর্মের মাঝে মিলাইল ধীরে।

নিস্তরঙ্গ তটিনীর জনশূন্য তীরে
নিঃশব্দে নামিল আসি সায়াহ্নচ্ছায়ায়
নিস্তব্ধ গগনপ্রান্ত নির্বাক্ ধরায়।

সেইক্ষণে বাতায়নে নীরব নির্জন
আমাদের দুজনের প্রথম চুম্বন।
দিক্-দিগন্তরে বাজি উঠিল তখনি
দেবালয়ে আরতির শঙ্খঘণ্টাধ্বনি।
অনন্ত নক্ষত্রলোক উঠিল শিহরি,
আমাদের চক্ষে এল অশ্রুজল ভরি।


শেষ বসন্ত

কাব্যগ্রন্থ-পুরবী

আজিকার দিন না ফুরাতে
হবে মোর এ আশা পুরাতে–
শুধু এবারের মতো
বসন্তের ফুল যত
যাব মোরা দুজনে কুড়াতে।
তোমার কাননতলে ফাল্গুন আসিবে বারম্বার,
তাহারি একটি শুধু মাগি আমি দুয়ারে তোমার।
বেলা কবে গিয়াছে বৃথাই
এতকাল ভুলে ছিনু তাই।
হঠাৎ তোমার চোখে
দেখিয়াছি সন্ধ্যালোকে
আমার সময় আর নাই।
তাই আমি একে একে গনিতেছি কৃপণের সম
ব্যাকুল সংকোচভরে বসন্তশেষের দিন মম।
ভয় রাখিয়ো না তুমি মনে!
তোমার বিকচ ফুলবনে
দেরি করিব না মিছে,
ফিরে চাহিব না পিছে
দিনশেষে বিদায়ের ক্ষণে।
চাব না তোমার চোখে আঁখিজল পাব আশা করি
রাখিবারে চিরদিন স্মৃতিরে করুণারসে ভরি।
ফিরিয়া যেয়ো না, শোনো শোনো,
সূর্য অস্ত যায় নি এখনো।
সময় রয়েছে বাকি;
সময়েরে দিতে ফাঁকি
ভাবনা রেখো না মনে কোনো।
পাতার আড়াল হতে বিকালের আলোটুকু এসে
আরো কিছুখন ধরে ঝলুক তোমার কালো কেশে।
হাসিয়া মধুর উচ্চহাসে
অকারণ নির্মম উল্লাসে,
বনসরসীর তীরে
ভীরু কাঠবিড়ালিরে
সহসা চকিত কোরো ত্রাসে।
ভুলে-যাওয়া কথাগুলি কানে কানে করায়ে স্মরণ
দিব না মন্থর করি ওই তব চঞ্চল চরণ।
তার পরে যেয়ো তুমি চলে
ঝরা পাতা দ্রুতপদে দোলে,
নীড়ে-ফেরা পাখি যবে
অস্ফুট কাকলিরবে
দিনান্তেরে ক্ষুব্ধ করি তোলে।
বেণুবনচ্ছায়াঘন সন্ধ্যায় তোমার ছবি দূরে
মিলাইবে গোধূলির বাঁশরির সর্বশেষ সুরে।
রাত্রি যবে হবে অন্ধকার
বাতায়নে বসিয়ো তোমার।
সব ছেড়ে যাব, প্রিয়ে,
সমুখের পথ দিয়ে,
ফিরে দেখা হবে না তো আর।
ফেলে দিয়ো ভোরে-গাঁথা ম্লান মল্লিকার মালাখানি।
সেই হবে স্পর্শ তব, সেই হবে বিদায়ের বাণী।


পূর্ণতা

কাব্যগ্রন্থ-পুরবী

স্তব্ধরাতে একদিন
নিদ্রাহীন
আবেগের আন্দোলনে তুমি
বলেছিলে নতশিরে
অশ্রুনীরে
ধীরে মোর করতল চুমি–
“তুমি দূরে যাও যদি,
নিরবধি
শূন্যতার সীমাশূন্য ভারে
সমস্ত ভুবন মম
মরুসম
রুক্ষ হয়ে যাবে একেবারে।
আকাশবিস্তীর্ণ ক্লান্তি
সব শান্তি
চিত্ত হতে করিবে হরণ–
নিরানন্দ নিরালোক
স্তব্ধ শোক
মরণের অধিক মরণ।’
শুনে, তোর মুখখানি
বক্ষে আনি
বলেছিনু তোরে কানে কানে–
“তুই যদি যাস দূরে
তোরি সুরে
বেদনা-বিদ্যুৎ গানে গানে
ঝলিয়া উঠিবে নিত্য,
মোর চিত্ত
সচকিবে আলোকে আলোকে।
বিরহ বিচিত্র খেলা
সারা বেলা
পাতিবে আমার বক্ষে চোখে।
তুমি খুঁজে পাবে প্রিয়ে,
দূরে গিয়ে
মর্মের নিকটতম দ্বার–
আমার ভুবনে তবে
পূর্ণ হবে
তোমার চরম অধিকার।’
দুজনের সেই বাণী
কানাকানি,
শুনেছিল সপ্তর্ষির তারা;
রজনীগন্ধার বনে
ক্ষণে ক্ষণে
বহে গেল সে বাণীর ধারা।
তার পরে চুপে চুপে
মৃত্যু রূপে
মধ্যে এল বিচ্ছেদ অপার।
দেখাশুনা হল সারা,
স্পর্শহারা
সে অনন্তে বাক্য নাহি আর।
তবু শূন্য শূন্য নয়,
ব্যথাময়
অগ্নিবাষ্পে পূর্ণ সে গগন।
একা-একা সে অগ্নিতে
দীপ্তগীতে
সৃষ্টি করি স্বপ্নের ভুবন।

শেষ কথা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা

আজকে আপনাদের শেয়ার করেছি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা  আশা করি আপনাদের পছন্দ হয়েছে। বাছাইকিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা  শেয়ার করেছি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা  আরো জানতে চাইলে কমেন্ট করে জানিয়ে দিন। আরো নতুন নতুন এমন সুন্দর সুন্দর প্রেমের কবিতা পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন, ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url