হৃদরোগ এড়ানোর গুরুত্বপূর্ণ সাতটি উপায়

হৃদরোগের কারণ ও প্রতিকার, হৃদরোগ থেকে মুক্তির উপায়, হার্টের রোগীর খাবার তালিকা, হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার, হার্টের সমস্যা কেন হয়,

হৃদরোগ এড়ানোর সাতটি উপায়ঃ

বর্তমান সময়ে আমাদের মাঝে হৃদরোগের সংখ্যা ক্রমোশই বেড়েই চলেছে। হৃদরোগ সাধারনত বংশগত কারন ছাড়াও অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন অনেকাংশে দায়ী। যদিও বংশগত কারনে হৃদরোগের পরিবর্তন না করা গেলেও অন্য যে সকল কারনে হৃদরোগ হয়ে থাকে তা থেকে আমরা এড়িয়ে চলতে পারি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে হৃদরোগ এড়াতে পারি। সামান্য সচেতন হলেই অনেকেই এই রোগ থেকে বাঁচতে বা রক্ষা পেতে পারেন। তাহলে চলুন দেখে নিই কি কি পন্থা অবলম্বন করলে হৃদরোগ এড়ানো সম্ভব।

নিম্নে হৃদরোগ এড়ানোর সাতটি উপায় বর্ননা করা হলো -

ধূমপান বন্ধ করুনঃ

ধূমপায়ীরাই বেশি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার এক বছরের মাথায় হৃদরোগের ঝুঁকি শতকরা ৫০ ভাগ কমে যায়। আর একজন ধূমপায়ী ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার ১৫ বছরের মাথায় হৃদরোগের মৃত্যুর ঝুঁকি একজন অধূমপায়ী পর্যায়ে চলে যায়। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার জন্য আপনার নিজের ইচ্ছাই যথেষ্ট।

লবণ কম খাবেনঃ

অতিরিক্ত লবণ বা লবণযুক্ত খাবার খাবেন না। পাতে কাঁচা লবণ খাওয়া পরিহার করুন। অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। সয়াসস এবং টেস্টিং সল্ট অর্থাৎ আজিনোমোটো দেয়া খাবারও বেশি খাওয়া ঠিক না। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে অনেক সময় আপনি চিন্তিত নাও হতে পারেন। কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ থেকে হার্ট ফেইলিওর এবং স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। সুতরাং আজ থেকেই লবণ কম খাওয়া শুরু করুন।

বেশি করে শাকসবজি ও মাছ খানঃ

সবুজ শাক সবজি ও মাছ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। সামুদ্রিক মাছ বেশি করে খান। কারণ এতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড। আর খাসি-গরুর মাংসের সম্পৃক্ত চর্বি রক্তের চর্বির মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। সেইসাথে ধমনী গুলোকে রক্ত চলাচলে ব্যর্থ করে তোলে। তাই সবুজ শাকসবজি ও মাছ বেশি করে খান, হৃদরোগ এড়ান।

নিয়মিত ব্যায়াম করুনঃ

নিয়মিত ব্যায়াম হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনে। ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম যারা করেন না তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি অনেক বেশি। নিয়মিত অল্প সময় ব্যায়াম করলেও তা শতকরা ৪০ ভাগ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমে যাওয়া রোধ করতে শারীরিক পরিশ্রমের প্রয়োজন আছে।

মানসিক চাপ কমানঃ

মানসিক চাপ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। কর্মক্ষেত্রে ও বাড়িতে মানসিক চাপ পরিহার করুন। নিজের জন্য সময় দিন। হালকা গান শুনুন, বই পড়ুন কিংবা বাইরে বেড়াতে যান। মনে রাখবেন মানসিক চাপ যেখানে আপনার এতটা ক্ষতি করছে, তাই সেটা এড়ানোর দায়িত্বও আপনার।

আপনার শিশুর কথা ভাবুনঃ

হৃদরোগ রাতারাতি বা হঠাৎ করে হয় না। তাই আপনার বাচ্চাদের দিকে নজর দিন। তাদেরকে এমন করে গড়ে তুলুন যাতে তারা হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে পারে, তাদের মাঝে যেন হৃদরোগের ঝুঁকি না থাকে। শিশুদের শাকসবজি ও মাছ সমৃদ্ধ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। তাদের আদর্শ ওজনের মাঝে রাখুন ও নিয়মিত ব্যায়াম এবং খেলাধুলা করতে দিন। খেয়াল রাখুন তারা যেন টিভি বা কম্পিউটারের সামনে বসে না থাকে। শিশুদের ভবিষ্যতের হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে বাবা-মায়েদেরকে। তাহলে হৃদরোগ এড়ানো সম্ভব হবে।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানঃ

যাদের পরিবারের কেউ না কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন তারা সাবধান হোন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। পরিবারে কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন এমন হলে তাদের নিকটাত্মীয়দের হৃদরোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি রয়েছে। তাই তারা নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাবেন। কোনো প্রকার সমস্যা হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url